Your Cart

Your cart is empty

Go find your favorite products and add them to the cart.

Continue Shopping

Sub Total

Tk


Proceed to Checkout

বাচ্চাদের রিলস আসক্তির ভয়াবহতা

বাচ্চাদের রিলস আসক্তির ভয়াবহতা

রাত ১১টা। দশ বছর বয়সী তামান্না এখনও ঘুমায়নি। বিছানায় শুয়ে শুয়ে সে ফেসবুক রিলস দেখছে একটার পর একটা। মা কয়েকবার ডাকলেও তামান্না বলেছে, "আরেকটু দেখি, এখনই ঘুমাবো।" কিন্তু তার ‘আরেকটু’ শেষ হচ্ছে না। ঘুমের ঘাটতি, পড়ালেখায় অমনোযোগ, আর দিনের পর দিন একাকীত্বে ডুবে থাকা—এই কি তামান্নার শিশুকাল হওয়ার কথা?

এই ঘটনা শুধু তামান্নার নয়, বরং আজকের অনেক শিশুর দৈনন্দিন বাস্তবতা। ইউটিউব, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম বা স্ন্যাপচ্যাটের মতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিশুদের সময় কাটানোর প্রবণতা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অথচ এই অতিরিক্ত ব্যবহার শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য বড় হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদিও "সোশ্যাল মিডিয়া আসক্তি" বলতে চিকিৎসাবিদ্যায় নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই, তবুও এটা একটি বাস্তব এবং চিন্তার বিষয়। যখন একজন শিশু চায় কম সময় ব্যবহার করতে, কিন্তু পারে না—তখনই বিষয়টি উদ্বেগজনক হয়ে ওঠে। এতে তারা পড়ালেখা, ঘুম, বাস্তব জীবনের বন্ধুত্ব সবকিছুর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, সামাজিক মাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার আত্মবিশ্বাস নষ্ট করে, মানসিক চাপ বাড়ায় এবং হতাশা বা একাকীত্ব তৈরি করে। ইনস্টাগ্রামের মতো প্ল্যাটফর্মে ‘নিখুঁত জীবনের’ প্রদর্শনী শিশুদের নিজেদের নিয়ে হতাশ করে তোলে।

সমাধান হিসেবে অনেকেই বলছেন, এসব প্ল্যাটফর্ম নিষিদ্ধ করে দেওয়া উচিত। কিন্তু বাস্তবতা হলো, নিষেধাজ্ঞা দিলে শিশুরা গোপনে বা ভুয়া অ্যাকাউন্ট খুলে সেগুলো ব্যবহার করতে পারে—যা অভিভাবকদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

এর পরিবর্তে প্রয়োজন ডিজিটাল লিটারেসি, মানে শিশুদের শেখানো—কোন কনটেন্ট ক্ষতিকর, কতটা সময় অনলাইনে থাকা নিরাপদ। পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে পরিবারে খোলামেলা আলোচনা, শিশুদের জন্য বাস্তব জীবনের আনন্দময় অভিজ্ঞতা, এবং অনলাইন-অফলাইনে ভারসাম্য—এসবই হতে পারে দীর্ঘমেয়াদি সমাধান।

Deborrah Childs-এর মতে, শিশুদের এমন পরিবেশে বড় হতে দিতে হবে, যেখানে তারা নিজের মতো করে নিরাপদে বেড়ে উঠতে পারে—চাপহীনভাবে, ভীতিহীনভাবে। প্রযুক্তি আমাদের শত্রু নয়, বরং সেটা হতে পারে শিশুর সুস্থ মানসিক বিকাশের একটি উপকারী সহযাত্রী—যদি আমরা ঠিকভাবে তাকে ব্যবহার করতে শিখি।